Friday, August 22, 2025
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
HomeFisheriesভোলায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে চিংড়ির রেণু শিকার

ভোলায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে চিংড়ির রেণু শিকার

Print Friendly, PDF & Email

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিনিয়ত চলছে বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেণু শিকার। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোলা সদর উপজেলার তুলাতলি এলাকায় মেঘনার তীরে শতাধিক জেলে মশারি ও বেহুন্দি জাল দিয়ে নির্বিচারে শিকার করছেন এই রেণু।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুধু প্রাপ্তবয়স্ক জেলেই নয়, ৮ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুরাও রেণু শিকার করছে। নদীর তীরে দাঁড়িয়ে তারা জাল ফেলে তুলে নিচ্ছে হাজার হাজার রেণু। জেলেদের ভাষ্য অনুযায়ী, জোয়ারের সময় পানি বেশি থাকায় সে সময় রেণু তেমন মেলে না, তবে ভাটার সময় পানি কমে গেলে নদীতে রেণু পাওয়া যায় বেশি। এই সময়েই তারা দলবদ্ধভাবে রেণু শিকার করেন।

একজন জেলে দিনে গড়ে ২-৩ হাজার পিস রেণু শিকার করতে সক্ষম হন, যা স্থানীয় আড়তে ১ থেকে ২ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। এভাবে দৈনিক লাখ লাখ রেণু শিকার করা হচ্ছে এবং তা ট্রাকে করে পাঠানো হচ্ছে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট অঞ্চলের বিভিন্ন চিংড়ি ঘেরে। এতে জড়িত রয়েছেন স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও আড়ৎদার।

এই অনিয়ন্ত্রিত রেণু শিকারের ফলে বিপন্ন হয়ে পড়ছে নদীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য। গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস)-এর মৎস্য কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানান, “রেণু ধরার সময় অন্যান্য দেশি প্রজাতির পোনা মাছও ধ্বংস হচ্ছে। এতে করে নদীর স্বাভাবিক প্রজনন ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, “আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি এবং ইতোমধ্যে অনেক অবৈধ জাল জব্দ করা হয়েছে। তবে জনবল ও পর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্টের অভাবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না।”

স্থানীয় সচেতন মহল ও পরিবেশবিদরা বলছেন, শুধু অভিযান চালিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন স্থানীয়ভাবে বিকল্প জীবিকা নিশ্চিত করা, জনসচেতনতা বাড়ানো এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ।

পরিবেশবিদ ও মৎস্য গবেষক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, “নদী ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে এর চরম মূল্য দিতে হবে। এটি শুধু পরিবেশের জন্য নয়, দেশীয় মৎস্য সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্যও মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।”

RELATED ARTICLES
- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments