Thursday, December 5, 2024
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
HomeCropসম্ভাবনাময় কাসাভা (শিমুল) আলু

সম্ভাবনাময় কাসাভা (শিমুল) আলু

Print Friendly, PDF & Email

কৃষিবিজ্ঞানী কাঞ্চন কুমার ভৌমিক (ভারত): আফ্রিকার জনপ্রিয় খাবার “ফুফু” মুলত কাসাভা আলুর সিদ্ধ যেমনটি আমরা আলুর সিদ্ধ বা চাল থেকে ভাতসিদ্ধ খাই। আমেরিকা, আফ্রিকা, ইউরোপ হয়ে আজ এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশে বিপুল চাহিদা। বিশ্বব্যাপী কাসাভা আলুর চাহিদা এতো পরিমান যে কাসাভা আলুর মোট ৬০ ভাগ মানুষের খাদ্য সহায়ক। ২৫ ভাগ গাবাদি পশুর খাদ্য সহায়ক আর বাকি ১৫ ভাগ স্টার্চ উৎপাদন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আফ্রিকার মানুষ খাদ্য হিসেবে তারা কাসাভা আলুকে প্রথম স্থানে নিয়ে এসেছে। তাদের দৈনন্দিন জীবনে কাসাভা আলু চাই ই চাই। দক্ষিণ আমেরিকার মানুষেরা কাসাভা আলুকে খাদ্য ও পশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে। তাই আমেরিকায় কাসাভা আলুর চাষ অনেক বেশি হয়। আফ্রিকা মহাদেশের তানজানিয়া, উগান্ডা, মোজাম্বিক, ঘানা ও যায়ারে প্রচুর পরিমানে কাসাভা আলু চাষ করা হয়। আফ্রিকার বেশিরভাগেই মানুষের খাদ্য হিসেবে কাসাভা আলুর চাষ করা হয়। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে চিন, ভারত, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ড এ প্রচুর পরিমানে কাসাভা আলুর চাষ করা হয়। এশিয়ায় চাষ করে তারা মানুষের খাদ্য ও বানিজ্যিক চাষ করে এছাড়া কাসাভা আলু থেকে তারা স্টার্চ কারখানা কাঁচামাল তৈরি করে। কাসাভা (Cassava) হলো উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলের আলু জাতীয় ফসল। কাসাভা আলু বিশ্বের প্রায় ২০০ মিলিয়ন মানুষের খাদ্য সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। বিশেষ করে আফ্রিকা মহাদেশের মানুষের জন্য কাসাভা আলু তাদের জাতীয় খাদ্য। বর্তমানে ভারতে ও বাংলাদেশে ব্যাপকহারে এই কাসাভা আলু চাষ করা হচ্ছে। গ্রামের মানুষেরা এই আলুকে আবার শিমুল আলু নামেও ডাকে তার কারন হল কাসাভা আলুর গাছ দেখতে অনেকটা শিমুল গাছের পাতার মত আর আলুর সাইজও শিমুল গাছের শিকড়ের মত। তাই শিমুল আলু নামে পরিচিত কাসাভা আলু আফ্রিকার সর্বত্র চাষ করা হয়।

কাসাভা আলুর উৎপত্তির ইতিহাসঃ প্রায় সাত হাজার বছর আগে কলোম্বিয়া ও ভেনিজুয়েলায় কাসাভা আলুর প্রথম চাষ করার ইতিহাস জানা যায়। তাই সবাই ধরে নেয় দক্ষিণ আমেরিকায় কাসাভা আলুর প্রথম চাষ করা হয় এবং এটাই কাসাভা আলুর উৎপত্তি স্থল হিসেবে স্বীকৃতি পায়। পনের শতকের সময় স্থানীয় কৃষক ও স্প্যানিশ বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা মধ্য আমেরিকায় কাসাভা আলুর চাষাবাদ শুরু করা হয়। এরপর ১৬ শতকের শেষের দিকে পর্তুগিজদের দ্বারা আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে কাসাভা আলু নিয়ে আসে এবং কাসাবা আলু চাষ শুরু করা হয় এরপর কাসাভা আলু চলে আসে এশিয়া মহাদেশে। স্প্যানিশরা এশিয়া মহাদেশে প্রথম কাসাভা আলু চাষ শুরু করে ফিলিপাইনে। এর পর ফিলিপাইন থেকে কাসাভা আলু এশিয়া মহাদেশের আরো বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পরে এবং চাষ করা হয়। আঠার শতকের শুরুতে পর্তুগিজদের হতে ভারতে কাসাভা আলুর আগমন হয় জানা যায় ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জনৈক খৃষ্টান মিশনারির মাধ্যমে কাসাভা আলু বাংলাদেশে চলে আসে এবং বাংলাদেশে প্রথম মধুপুর অঞ্চলে কাসাভা আলু চাষ করা হয়।

কাসাভা আলুর পুষ্টিগুণ: নানা পুষ্টিগুণে ভরা, যেহেতু কাসাভা আলু মাঠির তলদেশে প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদন হয় তাই কাসাভা আলুর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিকর উপাদন। এর মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ শর্করা, ১ থেকে ২ ভাগ রয়েছে প্রোটিন ও ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ রয়েছে জলীয় উপাদন। এছাড়া কাসাভা, আলুর চেয়ে দ্বিগুণ পরিমান রয়েছে শর্করা যাহা আলুর চেয়ে অনেক বেশি পুষ্টিগুন জোগান দেয়। যেখানে সাধারন আলু ১৮ ভাগ শর্করা ও ১৬.৩% স্টার্চ যোগান দেয় সেখানে কাসাভা আলু ৪০% শর্করা ও ৯০% স্টার্চ যোগান দেয়। আর কাসাভা আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ক্লুড ভাইবার ও ভিটামিন সি এর উপাদন।

কাসাভা আলুর উপকারিতা: কাসাভা আলু মানুষের বহু রোগ নিরাময় হিসেবে কাজ করে। কাসাভার একটি অংশ আঠালো থাকে যা আলুর থেকে রস বের হয় এই আঠালো অংশ ডায়াবেটিকস ও হৃদ রোগের জন্য কাজ করে । যাদের ডায়াবেটিক ও হৃদরোগ আছে তারা কাসাভা আলুর আঠালো অংশ খেতে পারেন। এছাড়া কাসাভা আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার যা মানুষের শরীরের বাড়তি কোলেস্টরল দুর করে। এছাড়াও কাসাভা আলু ক্যান্সারজনিত সকল রোগের ঔষধ হিসবে কাজ করে ক্যান্সার দুর করে। “মানিহোট এস্কুলেন্টা”, যাকে সাধারণত কাসাভা (Cassava), ম্যানিওক, বা ইউকা (অনেক আঞ্চলিক নামের মধ্যে) বলা হয় স্পারজ পরিবারের একটি কাঠের গুল্ম, ইউফোরবিয়াসি, দক্ষিণ আমেরিকার স্থানীয়। যদিও একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ, কাসাভা গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে বার্ষিক ফসল হিসাবে এর ভোজ্য স্টার্চি টিউবারাস মূলের জন্য ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়, কার্বোহাইড্রেটের একটি প্রধান উত্স . যদিও এটিকে প্রায়শই স্প্যানিশ আমেরিকার কিছু অংশে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে “ইউকা” বলা হয়, তবে এটি অ্যাসপারাগাসি পরিবারের একটি গুল্ম ইউক্কার সাথে সম্পর্কিত নয় । কাসাভা প্রধানত সেদ্ধ আকারে খাওয়া হয়, তবে যথেষ্ট পরিমাণে কাসাভা স্টার্চ বের করতে ব্যবহৃত হয়, যাকে বলা হয় ট্যাপিওকা , যা খাদ্য, পশুখাদ্য এবং শিল্পের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। ব্রাজিলিয়ান ফারিনহা এবং পশ্চিম আফ্রিকার সংশ্লিষ্ট গ্যারি হল একটি ভোজ্য মোটা ময়দা যা কাসাভার শিকড় ঝাঁঝরি করে, প্রাপ্ত গ্রেট করা সজ্জা থেকে আর্দ্রতা চেপে এবং অবশেষে শুকিয়ে (এবং ফারিনহা এবং গ্যারি উভয় ক্ষেত্রেই ভাজা) দ্বারা প্রাপ্ত হয়। ধান এবং ভুট্টার পরে কাসাভা গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে খাদ্য শর্করার তৃতীয় বৃহত্তম উত্স । কাসাভা হল উন্নয়নশীল বিশ্বের একটি প্রধান খাদ্য, যা অর্ধ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের জন্য মৌলিক খাদ্য প্রদান করে। এটি সবচেয়ে খরা-সহনশীল ফসলগুলির মধ্যে একটি, যা প্রান্তিক মাটিতে জন্মাতে সক্ষম। নাইজেরিয়া হল বিশ্বের বৃহত্তম কাসাভা উৎপাদনকারী, যেখানে থাইল্যান্ড হল কাসাভা স্টার্চের বৃহত্তম রপ্তানিকারক।

কাসাভা আলুর জাত: কাসাভা আলুর রয়েছে বিভিন্নরকম জাত। যখন একজন কৃষক কাসাবা আলু চাষ করার পরিকল্পনা গ্রহন করে তখনেই কাসাভা আলুর জাত নিয়ে ভাবতে হয়। কারন কেউ কাসাভা আলু চাষ করে ব্যবসা করার জন্য আবার কেউ চাষ করে বাড়ির খাবারের জন্য আবার কেউ মিষ্টি কাসাভা আলু চাষ করে। নিম্নে কিছু কাসাভা আলুর জাত ও বিভিন্ন দেশের আলুর জাতের নাম দেওয়া হল : ইন্দোনেশিয়ায় ADIRA-1,2,3,4 থাইল্যান্ডে RAYONG-1,2,3,60 ফিলিপাইনে PR-C 13,24,62 চীনে SC-201,205,124 জাতগুলো জনপ্রিয় । নাইজেরিয়ায় TMS-3001,30572,50395,30555 এবং কলম্বিয়ায় M.Col.-2215,1684, M.BRA-5,12 জাতগুলো উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও আরও নিত্যনতুন আলুর জাত বের হচ্ছে। ভারতে ও বাংলাদেশে কাসাভার জনপ্রিয় হাইব্রিড জাতগুলো হলো M-4, H-97, H-165,H-226, H-1687, H-2304 I S-856।

কাসাভা আলুর চাষ পদ্ধতি: কাসাভা আলু সব থেকে ভাল ফলন দেয় উঞ্চ ও নাতিশীতঞ্চ অঞ্চলে। যদি কোন মাটিতে উর্বর না থাকে সেখানেও কাসাভা আলু চাষ করা যায়। পাহাড়ি অঞ্চলে ভাল চাষ পাওয়া হায় এছাড়া বালু মাটিতেও কাসাভা আলুর চাষ অনেক ভাল হয়। মোটকথা যেখানে অন্য কোন ফসল ফলানো যায় না সেখানেও কাসাভা আলুর চাষ করা যায়। তবে মনে রাখবেন জলবন্ধতা ও লবানক্ত জায়গায় কাসাভা আলুর চাষ একদম হয় না। আর কাসাবা আলু একটি খরা সহনশীল ফসল। যেখানে ৬ মাস বেশ খরা ও শুষ্ক থাকে সেখানে কাসাভা আলুর চাষ হবে। ২০ থেকে ৩০ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় কাসাভা আলুর ভাল ফলন পাওয়া যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ৩০০ ফিট উপরেও চাষ করা যায়।

কাসাভা আলুর জমি তৈরি: কাসাভা আলুর জন্য সাধারনত জমি তৈরি করা লাগে না। আপনি চাসাভা আলুর জন্য সব থেকে ভাল জায়গা পাহাড়ী জায়গা বেচে নিতে পারেন। আর যদি বানিজ্যিক ভাবে চাষ করার পরিকল্পনা গ্রহন করেন তাহলে আপনি যে কোন ধরনের জমি বেচে নিতে পারেন। কাসাভা আলু চাষের জন্য মাটি কাটিং করে পিট তৈরি করতে হয়। এছাড়া সমান্তরাল জায়গাতেও করা যায় তবে কাসাভা আলুর কাটিং বা সেট তৈরি করে মাঠির পিট এ দিলে ফলন ভাল পাওয়া যায়। তাই আপনাকে সাজেশন দিতে পারি মাঠির পেট তৈরি করে কাসাভা আলু চাষ করুন।

কাসাভা আলুর গাছ লাগানোর নিয়ম ও সময়: কাসাভা আলুর গাছ লাগানোর নিয়ম অনেক ধরনের আছে। প্রতিহেক্টর জমিতে ১০ হাজার কাসাবা আলুর চাষ করা যায়। একটি গাছ থেকে অন্য গাছের দুরত্ব ৭০ সেমি থেকে ৯০ সেমি পর্যন্ত রাখতে হয়। যখন কাসাভা আলুর কাটিং রোপন করবেন তখন ২০ সেমি মাঠির নিচে ও ৫ সেমি মাটির নিচে দিবে। এর পর ১৫/২০ দিনের মধ্যেই রোপন করা কাটিং থেকে নতুন পাতা বের হবে। আর যদি নতুন পাতা বের না হয় তাহলে বুঝে নিবেন সেই কাটিং মরে গেছে। তাই সেখানে নতুন কাটিং রোপন করতে পারেন। কাসাভা আলু সারা বছরেই রোপন করা যায়। সাধারনত বর্ষা মৌসুমে রোপন করার জন্য উপযুক্ত সময়। আমাদের দেশে এপ্রিল ও মে মাসে কাসাভা আলু রোপনের সঠিক সময়।

কাসাভা আলুর বংশবিস্তার: গাছ লাগানোর জন্য বীজ কিংবা কাটিং উভয়ই ব্যবহার করা যায়। বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য পরিপক্ব কাণ্ডের কাটিং ব্যবহার করা হয়। কাসাভা সংগ্রহের সময় সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত কাণ্ডগুলো কেটে পরবর্তী বছর লাগানোর জন্য ছায়াযুক্ত স্থানে সংরক্ষণ করতে হয়। লাগানোর সময় কা-কে ১৫-২০ সেমি করে কেটে সোজা করে লাগাতে হবে। প্রতিটি কাটিংয়ে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭টি নোড থাকতে হবে।

কাসাভার সার ব্যবস্থাপনা ও সেচ: কাসাভা আলু চাষের জন্য তেমন কোন সারের দরকার পরে না। প্রাকৃতিক সারেই কাসাবা আলুর জন্য যতেষ্ট তবে যদি কেউ বানিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ করতে চান তাহলে প্রতিহেক্টর জমিতে ১৪০ থেকে ১৬০ কেজি পটাশিয়াম, ১৫ থেকে ২৫ কেজি ফসফরাস ও ১৮০ থেকে ২০০ কেজি নাইট্রোজেন প্রয়োগ করলে অধিক ফলন পাওয়া যায়। আর কাসাভা আলুতে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন পরে না। যদি বালু মাটি হয় তাহলে আপনি ৫ থেকে ১০ দিন পর পর সেচ দিতে পারেন। এতে মাটির আদ্রতা ঠিক থাকে ও ফলন ভাল হয়।

কাসাভা আলুর রোগবালাই ও পরিচর্যা: কাসাভা আলুতে তেমন ধরনের রোগবালাই হয় না। শুধুমাত্র লক্ষ রাখতে হবে আপনি যখন কাটিং লাগিয়েছেন তখন সেই কাটিং রোগ বালাইমুক্ত ছিল কিনা। আর কাসাভা আলুর গাছের বয়স ১ মাস হলে আপনি বাহ্যিক আগাছা পরিস্কার করে দিবেন এর সাথে গাছের গোড়ায় মাটি আলগা করে দিতে পারেন। এতে করে মাঠির উর্বরতা বাড়ে ও ফলন বৃদ্ধি পাওয়ার চাহিদাও থাকে বেশ। অনেক সময় কাসাভা গাছের পাতায় পোঁকা মাকর হানা দেয়। তাই আপনি পোঁকা-মাকরের ওষুধ ও স্প্রে দিয়ে তা নিরাময় করতে পারেন। এছাড়া কাসাভা আলুর শত্রু হলো ইঁদুর মাটির নিচে গর্ত করে ইঁদুর আলু খেয়ে ফেলে। আপনি বিভিন্ন উপায়ে তা নিধন করতে পারেন। ইঁদুর নিধনের জন্য আধুনিক পদ্ধতি ও আদিম পদ্ধতি অনুসরন করতে পারেন। বিষ দিয়েও মারতে পারেন অথবা ফাঁদ দিয়েও ইঁদুর মারতে পারেন।

কাসাভার সাথে অন্য ফসল চাষ: এমন একটি জমিতে কাসাভা আলু চাষ করেন যেখানে মাটি খুব উর্বর তাহলে কাসাভা আলুর সাথে আরও কিছু ফসল ফলাতে পারেন। বিভিন্ন দেশের মানুষ কাসাভা আলুর সাথে আরও কিছু ফসল চাষ করে থাকে আফ্রিকা ও ল্যটিন আমেরিকায় কাসাভা আলুর সাথে ৯০ ভাগ আন্তঃফসল চাষ করে তাদের জাতীয় ফলস ও শাক শবজি। ভারতে কাসাভা আলুর সাথে চাষ করে শিম, মোটর ডাল, পেঁয়াজ, চিনাবাদাম সহ নানা রকম শাক সবজি। মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ড কাসাভা আলুর সাথে নারিকেল, পাম ওয়েল, রাবার বাগান সহ শাক-শবজি চাষাবাদ করা হয়। ইন্দোনেশিয়ায় কাসাভার সাথে ধান ও ভূট্টা চাষ করা হয় আর বাংলাদেশে কাসাভা আলুর সাথে ছাড়া কচু ও সরিষা আবাদ করা হয়। এসব আবাদের ফলে কোনরকম ক্ষতি হয় না। তবে আলুর গাছের ঘনত্ব কমিয়ে আনলে ভাল হয়।

কাসাবা আলুর ফলন ও বাজারজাত: কাসাভা আলুর ফলন তুলনামূলক অনেক বেশি হয় একটি গাছ থেকে ১৮ থেকে ২২ কেজি কাসাভা আলু ফলন দেয়। সাধারনত প্রতি হেক্টর জমিতে ৩০ থেকে ৩৫ টন কাসাভা আলু ফলন দেয়। তবে ভাল ফলন হলে প্রতি হেক্টর জমিতে ৫৫ থেকে ৬০ টন কাসাভা আলুর চাষ পাওয়া সম্ভব। সঠিক ভাবে চাষাবাদ করলে ও বাজারজাত করলে কাসাভা আলু দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

লেখকঃ মূখ্য কৃষিবিজ্ঞানী (সুসংহত কৃষি), ডে-এন.আর.এল.এম, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রনালয়, ভারত সরকার।

RELATED ARTICLES

ঝিঙ্গা

পান

পাট

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments