ভোলা সংবাদদাতা: সবজি চাষের জন্য পরিচিত ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলা। রাস্তার দুই পাশে সবুজে ঢাকা বিভিন্ন ধরনের মন মাতানো সবজির ক্ষেত দেখা যায়। সারা বছরেই এ অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের সবজি যেমন ধুন্দুল, চিচিঙ্গা, করলা, লাউ, বেগুন, শসা, টমেটো ইত্যাদির চাষ হয়ে থাকে। সবজি চাষের জন্য কৃষকরা বীজ তলায় সবজির চারা উৎপাদন করে থাকে। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর অর্থায়ন ও কারিগরি সহযোগিতায় এবং স্থানীয় সংস্থা পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) এর সমন্বিত কৃষি ইউনিট কোকোডাস্টের মাধ্যমে গুণগত মানসম্পন্ন সবজির চারা উৎপাদনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
উন্নত মানের চারা উৎপাদনের জন্য সার্বক্ষনিক কারিগরি পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) এর কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: মনিরুল ইসলাম তিনি বলেন, কোকোডাস্টের মাধ্যমে চারা উৎপাদন একটি আধুনিক পদ্ধতি। মাটির স্পর্শ ছাড়া চারা উৎপন্ন করা হয় বলে মাটি বাহিত রোগ জীবানু হয় না। মাটির বদলে কোকোডাস্ট দেওয়া হয়। চরফ্যাশন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রোকনুজ্জামান বলেন, চরফ্যাশন উপজেলার কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর এর পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) কৃষি সম্প্রসারনে মাঠ পযায়ে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, কোকোডাস্ট হলো নারিকেল ছোবার গুড়া। নারিকেলের গুড়ায় যে লবন থাকে সেটি প্রথম অপসারণ করা হয়। এ গুড়া প্লাস্টিকের ট্রেতে দিয়ে চারা বসিয়ে দেওয়া হয়। চারার পুষ্টি চাহিদা পূরনের জন্য স্প্রের মাধ্যমে খাদ্যর যোগান দেওয়া হয়। পোকামাকড় যাতে এ চারায় আক্রমন করতে না পারে তাই চারার চারদিকে মশারীর নেট দেওয়া হয়। আবার প্রখর রোদের তাপ হতে রক্ষার জন্য চারার উপড়ে শেডনেট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। কঠোর নিয়ন্ত্রণনের মাধ্যমে চারা উৎপন্ন করা হয় বলে এ চারা অনেক সুস্থ ও সবল হয়। পরিশেষে, তিনি পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) ও পিকেএসএফ ধন্যবাদ জানান
বীজ তলায় চারা উৎপাদন করতে গিয়ে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। দেখা যায়, ৫০-৬০% চারা গজায়, আবার সে চারা ক্ষেতে রোপন করলে অনেক চারা মারা যায়। পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) এ বছর ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষন ইউনিয়নে জুয়েল সিকদার নামে একজনকে কোকোডাস্টের মাধ্যমে চারা উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ও কারিগরি সহযোগিতা দিয়েছে। জুয়েল সিকদার এ বছর প্লাস্টিকের মাধ্যমে প্রায় পঞ্চাশ হাজার বিভিন্ন ধরনের চারা উৎপন্ন করেন এবং তিনি চারা বিক্রয় করেন।
জুয়েল সিকদার বলেন, কোকোডাস্টের মাধ্যমে উৎপন্ন চারার শিকড় ক্ষতিগ্রস্ত হয় না বলে জমিতে রোপন করার পর কোন চারা মারা যায় না। আবার এ চারায় রোগজীবাণুর আক্রমণ কম হয় এবং গাছ দ্রুত সুস্থ সবল হয়ে বাড়তে থাকে। এ চারা রোপন করলে ১৫-২০ দিন আগে ফসল সংগ্রহ করা যায়। তিনি এ মাসে প্রায় ৫০ হাজার শসা, মরিচ, ধুন্দুল, করলা, চিচিঙ্গার চারা উৎপাদন করেছেন। কৃষকরা তার নার্সারী হতে চারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আশা করছেন, চারা ২০ দিনের মধ্য বিক্রি হয়ে যাবে। এতে তিনি বেশ লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।