বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ফল ও সবজি সংগ্রহের পর সতেজতা নির্ণয়ে মেটাবোলোমিক্স পদ্ধতি ব্যবহার বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় কৃষি অনুষদের সম্মেলন কক্ষে ‘মেটাবোলোমিক্স এপ্রোচ টু আইডেন্টিফাই দ্যা ফ্রেশনেস মার্কার মেটাবলাইটস অফ ফ্রুট এন্ড ভেজিটেবলস’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কর্মশালার আয়োজন করেছে বাকৃবি ও জাপানের গিফু ইউনিভার্সিটি।

অনুষ্ঠানে উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. মো. হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। গেস্ট অফ অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপানের গিফু ইউনিভার্সিটির দ্যা ইউনাইটেড গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেসের ভাইস ডিন অধ্যাপক ড. কোহেই নাকানো উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জি এম মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাম্মাদুর রহমান। এছাড়াও সেমিনারে মাস্টার্স এবং পিএইচডির শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। জানা যায়, মেটাবোলোমিক্স পদ্ধতির মাধ্যমে সহজেই ফল এবং শাক সবজির সতেজতা চিহ্নিতকারী বিপাক সনাক্ত করা সম্ভব। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. কোহেই নাকানো এক প্রেজেন্টেশন এর মাধ্যমে মেটাবোলোমিক্স পদ্ধতি ব্যবহার করে সবজি ও ফলের সতেজতা নির্ণয়ের উপায় উপস্থাপন করেন।
অধ্যাপক ড. কোহেই নাকানো জানান, ভোক্তারা যেন স্মার্ট ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে যেকোনো সময় যেকোনো সবজির সতেজতা নির্ণয় করতে পারে সেই লক্ষ্যেই তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. কোহেই নাকানো প্রেজেন্টেশন এর মাধ্যমে মেটাবলোমিকক্স এপ্রোচের মাধ্যমে কিভাবে সবজি ও ফলের সতেজতা নির্ণয় করা যাবে তা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘চাষাবাদের সময় কীটপতঙ্গ ও রোগের সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব, ডিস্ট্রিবিউটর এবং খুচরা বিক্রেতাদের দ্বারা অসতর্কতা এবং অব্যবস্থাপনার সাথে ফসলের পরিচালনাই পোস্ট—হার্ভেস্ট ক্ষতির প্রধান কারণ। বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে সতেজতা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ডিস্ট্রিবিউটর ও খুচরা বিক্রেতাদের প্রশিক্ষণ ও পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের সময় সতেজতার মাত্রা যাচাই করে সঠিক পরিচালনার পর্যায় পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমেই এ ক্ষতি এড়ানো যায়।’
নাকানো আরো বলেন, ‘ফ্লুরোসেন্স ফিঙ্গারপ্রিন্টিং দ্বারা লেটুসের সতেজতা মূল্যায়ন করা যায়। ভোক্তারা যেন স্মার্ট ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে যেকোনো সময় যেকোনো সবজির সতেজতা নির্ণয় করার লক্ষ্যেই আমি কাজ করে যাচ্ছি।’ সতেজতা নির্ণয়ের অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় তার প্রযুক্তি সহজলভ্য ও সস্তা বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া মেটাবোলোমিক্স পদ্ধতির গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করেন। উপাচার্য বলেন, সবজি ও ফলের সতেজতা নির্ণয়ে মেটাবলোমিক্স প্রযুক্তি ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এমন অভূতপূর্ব গবেষণার জন্য উপাচার্য ড. কোহেই নাকানোকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। জানা যায়, গিফু ইউনিভার্সিটির ছয় মাসের মাস্টার্স স্যান্ডউইচ ডিগ্রি প্রোগ্রামে বাকৃবির শিক্ষার্থীদের অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এবিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘গিফু ইউনিভার্সিটির মাস্টার্সের ছয় মাসের স্যান্ডউইচ প্রোগ্রামটি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ডেভেলপমেন্ট ও উচ্চতর গবেষণায় সাহায্য করবে।’