মোঃ সামিরুজ্জামান, ভোলা প্রতিনিধি:
দেরিতে হলেও ভোলার মেঘনায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। এতে কর্মচাঞ্চল্যে মুখর হয়ে উঠেছে জেলেপাড়া থেকে শুরু করে আড়ৎঘাট। মৌসুমের শুরুতে মাছ না পেয়ে দুঃসময় পার করা জেলেদের মুখে এখন হাসি ফিরেছে।
জেলেরা জানান, মৌসুমের প্রথম দিকে ইলিশের সংকট দেখা দিলে অনেকেই ধারদেনা করে অভাব-অনটনের মধ্যে পড়েন। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই জালে উঠছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। এতে একদিকে যেমন জেলেদের ঘাটতি কাটছে, অন্যদিকে আড়ৎ ও স্থানীয় বাজারও সরগরম হয়ে উঠেছে।
ভোলা সদরের তুলাতলী আড়তে গিয়ে দেখা যায়, ইলিশ বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলে ও আড়ৎদাররা। কেউ ওজন দিচ্ছেন, কেউ বরফে মাছ সংরক্ষণ করছেন, আবার কেউ ঝুড়ি ভরে মাছ পাঠাচ্ছেন ঢাকা ও বরিশালের বিভিন্ন আড়তে।
জেলে বশির, মোশারফ ও সোহেল জানান, আগে সারাদিন জাল বেয়েও যেখানে এক থেকে দেড় হাজার টাকার বেশি ইলিশ মিলত না, এখন প্রতিবার শিকারে গিয়ে ৮-৯ হাজার টাকার মাছ ধরা পড়ছে। জেলে শাহে আলম ও আবুল হোসেন বলেন, যদি এভাবে ইলিশ ধরা অব্যাহত থাকে, তবে অভিযানের আগেই বিগত সময়ের ধারদেনা শোধ করা সম্ভব হবে।
ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় আড়ৎদাররাও সন্তুষ্ট। আড়ৎদার মঞ্জু বলেন, “মৌসুমের শুরুতে ইলিশ না থাকলেও এখন প্রচুর পরিমাণে ধরা পড়ছে। এতে জেলেরাও খুশি, আমরাও খুশি।” কয়েকজন আড়ৎদার জানান, আগে তুলাতলী ঘাটে প্রতিদিন যেখানে এক লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি হতো, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকায়।
অপরদিকে, বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কিছুটা কমবে বলে আশা করছেন ভোক্তারা।
ভোলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ভূইয়া বলেন, “এ বছর ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। জেলেদের জালে যেহেতু প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে, আমরা আশাবাদী এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।”
ধারদেনার বোঝা ঝেড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা জেলেদের, ইলিশের বাম্পার সরবরাহে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ভোলাজুড়ে।