Friday, March 28, 2025
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
HomeCampusবাকৃবিতে তিন উপাচার্য ও এক ডিজিকে সংবর্ধনা প্রদান 

বাকৃবিতে তিন উপাচার্য ও এক ডিজিকে সংবর্ধনা প্রদান 

Print Friendly, PDF & Email

বাকৃবি সংবাদদাতা: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের পক্ষ থেকে তিনটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নবনিযুক্ত  মহাপরিচালককে (ডিজি) সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কমপ্লেক্সে ওই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক  ড. মো. মকবুল হোসেন। এসময় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানকে দেশের প্রাণিসম্পদ খাতে ভূমিকা রাখার জন্য সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনাপ্রাপ্ত সকলেই বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের প্রাক্তন কৃতি শিক্ষার্থী।  অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম ১৯৮৩ সালে বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদ হতে ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রি অর্জন করেন এবং তাঁর ব্যাচে পঞ্চম স্থান অর্জন করেন। ড. ইসলামের গবেষণার মূল ক্ষেত্র ভাইরোলজি, মলিকুলার এপিডেমিওলজি এবং ভ্যাকসিন উন্নয়ন। তিনি পোল্ট্রি এবং গবাদি পশুর বিভিন্ন রোগ যেমন নিউক্যাসল ডিজিজ, ইনফেকশিয়াস ব্রঙ্কাইটিস এবং লাম্পি স্কিন ডিজিজ-এর ভ্যাকসিন উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি মাল্টিপ্লেক্স আরটি-পিসিআর কিট এবং একাধিক ভাইরাস সনাক্তকরণের জন্য রোবোটিক আরবিসি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। 

অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম ১৯৯৪ সালে বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদ থেকে কৃতিত্বের সাথে ডিভিএম ও ১৯৯৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেনীতে প্রথম স্থান অর্জনসহ চ্যান্সেলর স্বর্নপদক লাভ করে মাস্টার অব সাইন্স ইন ফার্মাকোলজি ডিগ্রি অর্জন করেন। ড. ইসলাম ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে প্রাণীসম্পদ ক্যাডার হিসাবে যোগদানেরে মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্নজার্নালে প্রকাশিত তার রিসার্চ আর্টিকেলের মোট সংখ্যা ১০৮টি। গুগোল স্কলারের সর্বশেষ তথ্যমতে প্রকাশিত আর্টিকেলের সাইটেশন সংখ্যা ২২৩৪ টি। অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদ থেকে ১৯৯৯ সালে ডিভিএম ডিগ্রী অর্জন করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যানাটমি এবং হিস্টলজি থেকে ২০০১ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। ড. রহমান দীর্ঘ চব্বিশ বছর যাবত গবেষণা এবং অধ্যাপনায় নিয়োজিত আছেন। তিনি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে অসংখ্য গবেষণা পত্র প্রকাশ করেছেন অসংখ্য দেশি এবং আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান ১৯৯৫ সালে বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদ থেকে প্রথম শ্রেণীতে তৃতীয় হয়ে ডিভিএম ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ সার্জারি এন্ড অবস্ট্রেটট্রিকস থেকে ১৯৯৯ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ড. সুফিয়ান ১৯ তম বিসিএস এর মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯৯ সালে তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত দীর্ঘ ২৫ বছরের কর্মজীবনে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করার ও নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা তার রয়েছে। ড. সুফিয়ান শ্রীলংকা, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, বেলজিয়াম, থাইল্যান্ড, ইন্ডিয়া, নেপাল এবং ভিয়েতনামসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কনফারেন্স এবং ট্রেনিং এ অংশগ্রহণের জন্য ভ্রমণ করেছেন। তিনি বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণা পত্র প্রকাশ করেছেন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, সত্যবাদিতা, দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারলে উপাচার্যের দায়িত্ব কঠিন কিছু নয়। দেশের সকল ভেটেরিনারিয়ানদের লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশের মানুষের সেবা করা। বিশেষ করে দেশের কৃষকদের উন্নয়নে কাজ করা উচিত। এই লক্ষ্য পূরণে কোয়ালিটি গ্রাজুয়েট তৈরির বিকল্প নেই। তাই কোয়ালিটি গ্রাজুয়েট তৈরির মাধ্যমে জাতির সেবায় উপাচার্যদের এগিয়ে আসা উচিত।   অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান বলেন, আমাদের এই চারজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী দেশের তিনটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের এই অর্জন শুধু ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, এটি শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে ভেটেরিনারি অনুষদের ঐতিহ্য এবং অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি আরো বলেন, ভেটেরিনারি অনুষদ শুরু থেকেই দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন, রোগ প্রতিরোধ এবং টেকসই উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে গবেষণা ও শিক্ষার মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। আধুনিক গবেষণাগার, কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি, এবং উদ্ভাবনী উদ্যোগের মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ রক্ষায় এই অনুষদ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আজকের এই নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্বরা তাদের কর্মজীবনে যে উচ্চতায় পৌঁছেছেন তা আমাদের শিক্ষার মান, গবেষণার উৎকর্ষ এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনের সক্ষমতারই প্রতিফলন। তাদের অবদান কেবলমাত্র শিক্ষার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়, তারা দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের নীতি নির্ধারণ এবং বাস্তবায়নে অসামান্য ভূমিকা রাখছেন এবং ভবিষ্যতেও রাখবেন বলে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি বলে জানান অধ্যাপক বাহানুর। 

RELATED ARTICLES
- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments