Saturday, February 15, 2025
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
HomeColumnবিশ্ব মৃত্তিকা দিবস: মৃত্তিকার পরিচর্যা ও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা

বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস: মৃত্তিকার পরিচর্যা ও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা

Print Friendly, PDF & Email

ড. তোফাজ্জল ইসলাম: আজ বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস। সুস্থ মাটির গুরুত্বের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ এবং মৃত্তিকা সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার পক্ষে সমর্থন করার উপায় হিসাবে প্রতি বছর ৫ ডিসেম্বর বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পালন করা হয়। দিবসটি মাটির জীববৈচিত্র্য নিশ্চিত করতে এবং মাটির স্বাস্থ্যের উন্নতি, ক্ষয় ও দূষণ হ্রাস, জল পরিস্রাবণ এবং সঞ্চয় বৃদ্ধি, টেকসই কৃষিখাদ্য ব্যবস্থা অর্জন এবং কার্বন সিকোয়েস্ট্রেশনে অবদান রাখতে মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনার ভূমিকা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে।

আন্তর্জাতিক মৃত্তিকা বিজ্ঞান ইউনিয়ন (আইইউএসএস) ২০০২ সালে প্রাকৃতিক ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে এবং মানব কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী হিসাবে মাটির গুরুত্ব উদযাপনের জন্য ৫ ডিসেম্বরকে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস হিসাবে চিহ্নিত করার প্রস্তাব করে। ৫ ডিসেম্বর তারিখটি বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ এটি থাইল্যান্ডের রাজা প্রয়াত ভূমিবল আদুলিয়াদেজের আনুষ্ঠানিক জন্মদিনের সাথে মিলে যায়, যিনি এই উদ্যোগের অন্যতম প্রধান প্রবক্তা ছিলেন। ২০১৩ সালের জুন মাসে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বিশ্ব মৃত্তিকা দিবসকে সর্বসম্মতিক্রমে সমর্থন করে এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৮তম অধিবেশনে ৫ ডিসেম্বরকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
এ বছর, আমরা “মাটির যত্ন: পরিমাপ, মনিটর, ব্যবস্থাপনা (Caring for soils: measure, monitor, manage)” থিম নিয়ে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উদযাপন করছি, যা জীবন, জীবিকা এবং প্রকৃতি বজায় রাখার জন্য মাটির সম্পদ বোঝার, ওকালতি করতে, সিদ্ধান্ত নিতে এবং টেকসইভাবে ব্যবস্থাপনার জন্য মাটির তথ্য এবং তথ্যের গুরুত্বকে তুলে ধরে। বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস ৫ই ডিসেম্বর পালন করার মাধ্যমে, সারা বিশ্বে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এই দিনে বিভিন্ন সরকার, প্রতিষ্ঠান, গবেষক ও পরিবেশবিদরা একত্রিত হয়ে সচেতনতা প্রচার করেন এবং বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে মাটির সংরক্ষণে ভূমিকা রাখেন। আমাদের খাদ্যের 95% এরও বেশি মাটি থেকে উদ্ভূত হয়। মৃত্তিকা সম্পদের স্বাস্থ্য সরাসরি মানবতা এবং গ্রহের বেঁচে থাকার সাথে জড়িত। মজার ব্যাপার হচ্ছে যে, পৃথিবীতে মানুষসহ সকল জীবের দেহ বিশ্লেষণ করলে যেসব মৌলিক উপাদান এবং জৈব যৌগ (জেনেটিক কোডসহ) পাওয়া যায়, তার সবগুলিই মৃত্তিকায় বিদ্যমান।

আসুন, আমরা মৃত্তিকা কাকে বলে সংক্ষেপে আলোচনা করি? রাশিয়ান বিজ্ঞানী ভাসিলি ভাসিলেভিচ ডকুচায়েভকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তিনি মাটির একটি সংজ্ঞা দিয়েছেন: “মৃত্তিকা হলো পৃথিবীর পৃষ্ঠের শিলা বা পাথরের উপরের স্তর, যা জলবায়ু, উদ্ভিদ, প্রাণী এবং অণুজীবদের প্রভাবে বিকৃত বা পরিপক্ব হয় এবং যেটিতে জীববৈচিত্র্য ধারণ করার ক্ষমতা থাকে।” ডকুচায়েভ মাটির গঠন ও বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে পরিবেশগত প্রক্রিয়া ও জীবনের ভূমিকার গুরুত্বের উপর আলোকপাত করেছেন। অন্যদিকে, বিখ্যাত মাটি বিজ্ঞানী এনসি ব্রেডি মাটির সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে: “মৃত্তিকা হলো পৃথিবীর শিলা স্তরের উপরের একটি শিথিল বা উপযুক্ত স্তর, যা বায়ু, জল, অণুজীব এবং উদ্ভিদের প্রভাবে তার গঠন ও বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয় এবং যা খাদ্য উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।” ব্রেডি মাটির জীববৈচিত্র্য, উপাদান এবং কৃষির সাথে সম্পর্কিত গুণাবলীর ওপর গুরুত্ব দেন। এই দুটি সংজ্ঞা মাটির বৈজ্ঞানিক ধারণাকে আরও স্পষ্ট করেছে, এবং প্রমাণিত হয়েছে যে মাটি কেবল একটি ভৌত স্তর নয়, বরং এটি একটি জীবন্ত ও গতিশীল সত্তা, যা পৃথিবীর পরিবেশ ও জীবনের সাথে গভীরভাবে যুক্ত। অতএব, মাটি একটি জীবন্ত সত্তা, যা বিভিন্ন অণুজীব ধারণ করে। পৃথিবীর সমস্ত জীবন্ত প্রাণীর স্বাস্থ্য এবং কৃষির উত্পাদনশীলতার জন্য মাটি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, মাটির মাইক্রোবায়োম (বৈচিত্রময় অণুজীব সমগ্র) ভূ-রাসায়নিক চক্র, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন এবং কার্বন সিকোয়েস্ট্রেশন এবং মাটিতে বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেন স্থিরকরণের মূল চালিকা শক্তি। মাটির স্বাস্থ্য বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত।
মাটি তার ভৌত বৈশিষ্ট্যের তুলনায় একটি বহুমুখী ভূমিকা পালন করে। এটি একটি গতিশীল আবাস, যা ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, অন্যান্য অণুজীব, পোকামাকড়, এবং বৃহত্তর স্তন্যপায়ীদের মতো বহু প্রজাতির প্রাণিজগতকে ধারন করে। এই সম্পদশালী জীববৈচিত্র্য পুষ্টির চক্র, পানি চক্র, এবং পোকা নিয়ন্ত্রণের মতো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যবান মাটি আমাদের ইকোসিস্টেমকে উদ্দীপিত করে, কৃষি উৎপাদনশীলতাকে বাড়িয়ে তোলে, এবং খাদ্য ব্যবস্থার স্থায়িত্বে অবদান রাখে। কিন্তু আমরা উদ্বেগজনকভাবে লক্ষ করছি যে মাটির ক্ষয়, দূষণ, এবং অবনতি আমাদের সেই অত্যাবশ্যক সম্পদকে সংকুচিত করছে।

মাটির স্বাস্থ্য তিনটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সাথে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত। প্রথমত, লক্ষ্যমাত্রা ২: ক্ষুধা নির্মূলের জন্য ৯৫% খাবার মাটির উপর উৎপাদিত হয়, তাই স্বাস্থ্যকর মাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয়ত, লক্ষ্যমাত্রা ৩: স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবারের বৃহত্তর উৎপাদনের জন্য স্বাস্থ্যকর মাটি অপরিহার্য। তৃতীয়ত, লক্ষ্যমাত্রা ১৩: জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলায়, সঠিক মাটি ব্যবস্থাপনা আমাদের ইনপুট কমাতে, পুষ্টির লিকেজ এবং রানআউট কমাতে এবং কার্বন শোষণ উন্নীত করতে সাহায্য করে। এছাড়া, লক্ষ্যমাত্রা ১৫: ২০৩০ সালের মধ্যে ভূমি অবক্ষয় নিরপেক্ষতা অর্জনের জন্য, জীবন ধারণের জন্য ভূমি রক্ষা করা জরুরি। এই সবকিছু মিলিয়ে, মাটির স্বাস্থ্য আমাদের উন্নয়ন এবং ভবিষ্যতের জন্য অত্যাবশ্যক।
মাটি স্বাস্থ্য হলো টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা এবং সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তার মূল ভিত্তি। আমাদের স্বীকৃতি দিতে হবে যে, স্বাস্থ্যকর মাটির একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা রয়েছে, যা পুষ্টি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং টেকসই জীবিকার জন্য অপরিহার্য। তাই আমাদের মাটির গুরুত্ব অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে এবং তার উপযুক্ত মূল্য দিতে হবে। মাটির যত্ন নিতে এবং এটি রক্ষা করতে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্যকর মাটি কেবল কৃষির জন্য নয়, বরং মানব জীবন, পরিবেশ এবং জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষার জন্যও অপরিহার্য। বিশ্বব্যাপী মাটির পরিচর্যা নিশ্চিত করতে, ভৌত, রাসায়নিক এবং জৈবিক দিক থেকে একটি ন্যূনতম সূচক সেট স্থাপন করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, ভৌত সূচকগুলির মধ্যে মাটির আর্দ্রতা, ঘনত্ব এবং গঠন অন্তর্ভুক্ত হতে পারে; রাসায়নিক সূচকগুলির মধ্যে পিএইচ (pH), পুষ্টি উপাদানগুলির ঘনত্ব এবং বিষাক্ততা পরিমাপ করা যেতে পারে; এবং জৈবিক সূচকগুলির মধ্যে মাটির প্রাণবৈচিত্র্য এবং জৈব পদার্থের স্তর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নিয়মিত পর্যবেক্ষণের (monitoring) জন্য, এসব সূচকের জন্য ৩-৫ বছরের মধ্যে পর্যবেক্ষণের সময়রেখা রাখতে হবে, যাতে আমরা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তনগুলি বিশ্লেষণ করতে পারি। দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ নিশ্চিত করার পাশাপাশি, তথ্য পরিচালনার জন্য একটি কার্যকর সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি মাঠ, দূরবর্তী বা ল্যাবরেটরিতে হতে পারে, যা সঠিকভাবে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করবে।
মাটির মাইক্রোবায়োম (অণুজীব সমগ্র) পৃথিবীর অন্যতম বৈচিত্র্যময় মাইক্রোবায়াল ইকোসিস্টেম, যেখানে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, আর্কিয়া, ভাইরাস এবং প্রোটিস্ট বিদ্যমান। এই মাইক্রোবায়াল সম্প্রদায়গুলি গাছের স্বাস্থ্য এবং তাদের বিভিন্ন অভিঘাতসমূহ (যেমন খরা, ভারী ধাতু দূষণ, এবং প্যারাসাইটস)-এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাটি এবং এর মাইক্রোবায়োম মানুষের খাদ্যের ৯৮.৮% পর্যন্ত সরবরাহ করে। কিন্তু খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) পূর্বাভাস দিয়েছে যে, মানব কার্যকলাপ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে, মাটির অবক্ষয় কৃষিখাদ্য ফলনের ২০-৮০% ক্ষতির কারণ হতে পারে। এর ফলে নতুন টপসয়েল তৈরি হওয়ার হার অত্যন্ত ধীর, যা সাধারণত বছরে মাত্র ০.২৫-১.৫ মিমি।
মানব জনসংখ্যার বৃদ্ধির চাহিদা মেটাতে, যা ২০৫০ সালে ৯.৮ বিলিয়নে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, নতুন সমাধানের প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী। এই সমাধানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মাটির অণুজীবের কার্যকর ব্যবহার। মাটির অণুজীব কৃষি উৎপাদন এবং মাটির স্বাস্থ্যকে স্থায়ীভাবে উন্নত করার একটি প্রতিশ্রুতিশীল উপায় হিসেবে পরিচিত। বিশেষ কিছু মাটির মাইক্রোবায়োম সম্পৃক্ত উদ্ভিদের বৃদ্ধি বাড়াতে সার অথবা কীটনাশক হিসেবে কাজ করতে পারে, ফলে কেমিক্যাল ব্যবহারের উপর নির্ভরতা কমানো সম্ভব হয়। এছাড়াও, এই অণুজীবগুলি লবণাক্ত অথবা ক্ষারীয় মাটিতে উদ্ভিদের উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। মাটির অণুজীব জৈব এবং ভারি ধাতু দূষিত পদার্থের পরিশোধনে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এদের মাধ্যমে কার্বন চক্র এবং সিকোয়েস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করা হয়, সেইসাথে পরিবেশে কার্বন ধারণ এবং সঞ্চয়ের সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়। বর্তমানে আমাদের পৃথিবী জলবায়ু পরিবর্তন এবং দূষণের মতো মানবসৃষ্ট সমস্যার সম্মুখীন, যা মাটির ইকোসিস্টেম এবং তাদের উপকারী সেবাগুলির ওপর ভীষণ প্রভাব ফেলছে। জলবায়ু পরিবর্তন যেমন উপকূলীয় অঞ্চলে সাগরের স্তরের উত্থান, লবণাক্ত ও ক্ষারীয় মাটির বৃদ্ধি, অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা এবং শুষ্কতার প্রভাব ফেলছে। এই সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য মাটির অণুজীব নিয়ে নতুন করে গবেষণা ও তাদের ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি।
তবে এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে, ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তনের কারণে সারা বিশ্বে মাটির গুণাগুণ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। ইউনেস্কো (২০২৪) জানিয়েছে যে, বিশ্বের প্রায় ৭৫% মাটির গুণাগুণ অবক্ষয় হয়েছে । ২০৫০ সালের মধ্যে ৯০% বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা ৩.২ বিলিয়ন মানুষকে সরাসরি প্রভাবিত করবে। যখন ভূমি অবক্ষয় হয়, তখন এটি খাদ্য সুরক্ষা, জলের প্রাপ্যতা এবং বাস্তুতন্ত্রের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে, সরাসরি অর্ধেক মানবতাকে প্রভাবিত করে এবং প্রতি বছর প্রায় ৪০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের বাস্তুসংস্থান পরিষেবাগুলি হ্রাস করে । যা ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী জিডিপির প্রায় অর্ধেক ৯৩ ট্রিলিয়ন ডলার ছিল। ভূমি অবক্ষয়কে “স্থলজ জীববৈচিত্র্য হ্রাসের একক বৃহত্তম কারণ” হিসাবেও বিবেচনা করা হয় এবং জলবায়ু পরিবর্তনে যথেষ্ট অবদান রাখে। ২০০০ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে, অবক্ষয়প্রাপ্ত জমি থেকে বার্ষিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ছিল ৪.৪ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড ।

মাটি প্রতিটি জৈবিক এবং অজৈবিক উপাদানের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় এটি সাধারণীকরণের ক্ষেত্রে অনেক কঠিন। মাটি স্বাস্থ্য বিভিন্ন পরিবেশ এবং স্থানীয় ফ্লোরা ও ফনার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। তবে, মাটির প্রাণিকুল সাধারণত সেই উপরের স্তরে ঘটে যেখানে জৈব পদার্থ এবং খনিজ উপাদানসমূহের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। মৃত উদ্ভিদ, যেমন পাতা, এই স্তরকে পুষ্ট করে এবং গভীর ইকোসিস্টেমের জন্য কার্বন সরবরাহ করে। মাটি প্রধানত ভূমির ইকোসিস্টেমে কার্বনের একটি বৃহৎ অংশ সঞ্চয় করে (প্রায় ৮০%)। তবে, জলবায়ুর পরিবর্তনের সাথে আর্কটিক অঞ্চলে মাটির তাপমাত্রা বাড়লে মাইক্রোবগুলির কার্যকলাপ বেড়ে যায়, যা প্রাচীন মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণী থেকে কার্বন মুক্ত করে। এর ফলে পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে কার্বনের স্থিতিশীলতা হ্রাস পেতে পারে। কিছু মডেল আশঙ্কা করে যে, পরিবেশগতভাবে উচ্চতর কার্বন প্রথমে উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে, কিন্তু এটি মাটির অণুজীববের বৈচিত্র্যকে হ্রাস করবে, যা পরে উদ্ভিদের গুণমান হ্রাস করবে। পাশাপাশি, অণুজীব অনেকজাতীয় গাছের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে, এবং জলবায়ু পরিবর্তন কিছু অঞ্চলে গাছের বৈচিত্র্য এবং মাটির কার্বন ধারণ ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে।
কৃষিজ সকল খাদ্য উত্পাদনের জন্য মৃত্তিকা একটি মৌলিক প্রাকৃতিক সম্পদ। মৃত্তিকার স্বাস্থ্যের সাথে পৃথিবীর সকল জীবের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত। সেজন্য টেকসই কৃষিজ খাদ্যেৎপাদনের জন্য মৃত্তিকার স্বাস্থ্য সুরক্ষা একান্ত প্রয়োজন। কিন্ত্ত গত অর্ধশতাব্দী যাবত আমরা মৃত্তিকা সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহারের মাধ্যমে কেবল বেশী ফলন বা উত্পাদনকেই ফোকাস করেছি। অধিক ফলনের লক্ষ্যে ক্রমবর্ধমান হারে রাসায়নিক সার এবং বালাইনাশক ব্যবহার করে আসছি। এসব সিনথেটিক রাসায়নিক পদার্থ নিবিড় শস্য চাষে যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে বাংলাদেশের মৃত্তিকার স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে নষ্ট হয়। মৃত্তিকা জৈব পদার্থ ও কার্বনের পরিমান আশংকাজনক হারে কমেছে। ফলে বর্ধিত রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারেও বর্তমানে ফসলের ফলন আগের মতো বাড়ছে না।  যদিও মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউট গত পাঁচ দশকে মৃত্তিকার ভৌত-রাসায়নিক বৈশৈষ্টাবলীর ডাটা তৈরি এবং কৃষককে সার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে আসছে, কিন্তু মৃত্তিকার স্বাস্থ্য সম্পর্কে এসব তথ্যাবলী অসম্পুর্ন । কারণ মৃত্তিকা স্বাস্থ্যের সবচেয়ে মৌলিক অংশ হচ্ছে, মৃত্তিকায় বসবাসকারী বৈচিত্র্যময় অণুজীব। মৃত্তিকা অণুজীবসমূহ পরিবেশে ভূরাসায়নিক পুষ্টি উপাদানের চক্রায়নে মূল ভূমিকা পালন করে থাকে। মৃত্তিকা অণুজীব উদ্ভিদের পুষ্টি, বৃদ্ধি, উন্নয়ন এবং জলবায়ুর সকল অভিঘাতসমূহ্ অভিযোজনে মৌলিক ভুমিকা পালন করে। মৃত্তিকা অণুজীবের কার্যক্রম জীববৈচিত্র ও জলবায়ুর পরিবর্তনে নিয়ামক ভুমিকা পালন করে থাকে। সেজন্য অবক্ষয়প্রাপ্ত মৃত্তিকা স্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা মৃত্তিকা সম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারি।

অধুনা শটগান মেটাজিনোমিক্স বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমরা মাইক্রোবায়োমসহ মৃত্তিকা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পারি। আমরা বাংলাদেশ মৃত্তিকা মাইক্রোবায়োম মানচিত্র তৈরি করে মৃত্তিকার যথাযথ ব্যবহারের ভিত্তি তৈরি করতে পারি। অবক্ষয়প্রাপ্ত মৃত্তিকা স্বাস্হ্য উন্নয়নে আমরা মাইক্রোবায়োম ইন্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারি। সুতরাং গতানুগতিক মৃত্তিকা পরীক্ষা এবং ব্যবহার ব্যবস্থার আশু সংস্কারের মাধ্যমে টেকসই মৃত্তিকা সম্পদের ব্যবহারে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার নিশ্চিত করার প্রয়াস আশু প্রয়োজন। এ ছাড়া মৃত্তিকা মাইক্রোবায়োম ম্যাপের ওপর ভিত্তি করে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত স্থানিক সমস্যা সমাধান, শস্য পর্যায় ও শস্য বিন্যাসে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি। কৃষি কর্মকান্ড যেমন ধান চাষ, গবাদিপশুর বাণিজ্যিক খামারকরনে মিথেনসহ অন্যান্য গ্রীনহাউজ গ্যাসের উদগীরনের কমানোর মাধ্যমে গ্লোবাল ও স্থানিক উষ্ণায়ন হ্রাস করে মৃত্তিকায় কার্বন সংযোজন বাড়াতে পারি। সেজন্য দেশের মৃত্তিকার হটস্পট-ভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহন ও তা বাস্তবায়ন আশু প্রয়োজন।
গত দুই দশকে জিনোমিক্স এবং মেটাজিনোমিক্স প্রযুক্তি দ্রুত বিকাশলাভ করেছে। ইতোপূর্বে মৃত্তিকা এবং পরিবেশে বিদ্যমান অণুজীবের কেবল ১% গবেষণারে কৃত্রিম মিডিয়ায় চাষ করে কেবল চাষযোগ্য মৃত্তিকা অণুজীবের অধ্যয়ন করা হয়েছে। ফলে শতকরা প্রায় ৯৯ ভাগ মৃত্তিকা বা পরিবেশের অণুজীবই অধ্যয়ন করা যায়নি। বর্তমান মেটাজিনোমিক্স পদ্ধতিতে যেহেতু আবাদ মাধ্যমে জন্মানোর প্রয়োজন নেই, ডিএনএ এক্সট্রাক্ট করে শতভাগ অণুজীবের ডিএনএ সিকোয়েন্স করে বায়োইনফরমেটিক্স এবং কম্পিউটেশনাল বায়োলজির মাধ্যমে এদের প্রতিটির জীবনরহস্য উন্মোচন, একে অপরের সাথে মিথস্ক্রিয়া এবং পরিবেশ এ উদ্ভিদে এদের কার্যাবলী বিশদ জানা যাচ্ছে। অজানা বিশাল এ প্রাণবৈচিত্র্যের মধ্য বিদ্যমান এনজাইম,  উপকারী জৈবযৌগ, জিন ইত্যাদি উদঘাটন এবং জীবপ্রযুক্তির মাধ্যমে তা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন এবং এদের শিল্প ও কৃষিতে ব্যবহার এক বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। এক গ্রাম স্বাস্থ্যকর কৃষি মাটিতে ১০ বিলিয়ন পর্যন্ত অণুজীব থাকতে পারে, যা হাজার হাজার বিভিন্ন প্রজাতির প্রতিনিধিত্ব করে। মাটিতে বিদ্যমান সর্বাধিক অণুজীব হল ব্যাকটেরিয়া, তবে আর্কিয়া, প্রোটিস্ট, ছত্রাক, ভাইরাস এবং অন্যান্য আণুবীক্ষণিক জীবও রয়েছে।

মাটির অণুজীব সম্প্রদায়ের গঠন প্রতিটি বাস্তুতন্ত্রের জন্য অনন্য। মাটিতে যে পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া জন্মে তা মাটির সামগ্রিক গঠন দ্বারা নির্ধারিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, উদ্ভিদের শিকড়ের চারপাশের অঞ্চল, যা রাইজোস্ফিয়ার নামে পরিচিত, প্রতি গ্রাম মাটিতে ১০ বিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া কোষ থাকতে পারে। এসব প্রাকৃতিক সম্পদকে আহরণ এবং তা কৃষি ও শিল্পে ব্যবহারের জন্য চাই প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং জ্ঞান। সুতরাং মৃত্তিকা বিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমে জিনোমিক্স, বায়োইনফরমেটিক্সসহ অন্যান্য উদীয়মান বিষয় সংযুক্ত করা প্রয়োজন। এ ছাড়া গবেষণা প্রকল্পে জীবপ্রযুক্তিবিদ, ডেটা সায়েন্টিস্টসহ সম্পর্কিত বিষয়াবলীর বিশেষজ্ঞ সংযোজন করা প্রয়োজন। মৃত্তিকা অণুজীবস্ট্রেপটোমাইসিস থেকে প্রায় ৪০০ এর বেশী মানুষের ও অন্যান্য প্রাণীর প্রাণরক্ষাকারী এন্টিবায়োটিক আবিস্কার করে জাপানিজ বিজ্ঞানী সাতেশি ওমুরা ২০১৫ সালে শারীরবিদ্যা অথবা চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি মৃত্তিকা অণুজীব থেকে শুধু প্রাকৃতিক মূল্যবান যৌগ আবিস্কার করে এদের ব্যবহার ও অণুজীবে এদের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণকারী জিনসমূহও উদঘাটন করেছিলেন। সুতরাং বিজ্ঞানের এ যুগে মাল্টিডিসিপ্লিনারি এপ্রোচ ব্যতিরেকে কোন ব্রেকথ্রো করা সম্ভব নয়।

সম্প্রতি, বশেমুরকৃবির ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি (আইবিজিই) এবং মৃত্তিকা সম্পদ ইনসিটিটিউটের বিজ্ঞানীরা নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন কৃষি পরিবেশ অন্চলের মাইক্রোবায়োম বিশ্লেষণ এবং মাটির উর্বরতা, উৎপাদনক্ষমতা, কার্বন সিকোয়েস্ট্রেশন, নাইট্রোজেন ফিক্সেশন এবং গ্রীনহাউজ গ্যাস নির্গমনের সাথে মাইক্রোবায়োমের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করছে । বিজ্ঞানীদল ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সয়েল মাইক্রোবায়োম ম্যাপিং করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এ পরিকল্পনাটি বাসতবায়নের জন্য দেশের সংশ্লিষ্ট কৃষি, অণুজীব, জলবায়ু এবং জীবপ্রযুক্তিবিদদের সমন্বয়ে একটি গবেষণা টিম গঠন করে প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলা এবং গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করে টেকসই কৃষিখাদ্য উৎপাদন ও মৃত্তিকা স্বাস্থ্য উন্নয়নে এ প্রকল্পটি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ হবে বলে মনে করি। এ ধরনের গবেষণা প্রকল্পের ফলাফল কৃষিতে পরিবেশ দুষক রাসায়নিকের ব্যবহার হ্রাস করবে এবং বিদেশ থেকে এসব রাসায়নিক উপকরন (যেমন- রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক) আমদানী ও ভর্তুকী হ্রাস করবে। নবায়নযোগ্য মৃত্তিকা মাইক্রোবায়োম দেশের জৈবসোনা। এদের আবিস্কার এবং কৃষিতে ব্যবহার নিরাপদ খাদ্যোৎপাদনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
বাংলাদেশের মৃত্তিকার যথেচ্ছ ব্যবহার, শিল্প বর্জ্যের বিশোধন ব্যতিরেকে পরিবেশে নিঃসরন, যথেচ্ছ পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার এবং তা পরিবেশে ফেলে দেওয়া, নিম্ন মানের রাসায়নিক ও বালাইনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার, অনিয়ন্ত্রিত ভূ-গর্ভস্থ সেচ পানির উত্তোলনের ফলে বিস্তীর্ণ এলাকার মৃত্তিকা ও জলাভূমি আজ ভারী ধাতু যেমন আর্সেনিক, ক্রোমিয়ামে দূষণ এবং মাইক্রো-, ন্যানো ও প্লাস্টিক নিঃসরিত মানুষ ও অন্যান্য জীবের হরমোনাল সিস্টেম ধ্বংসকারী রাসায়নিক (প্লাস্টিসাইজার যেমন বিসফেনল এ ইত্যাদি) মানবকুলসহ সকল জীবের স্বাস্থ্য, প্রজননে এক বিরাট হুমকি হয়ে দাঁডিয়েছে। মৃত্তিকারও উৎপাদিকা শক্তিকে হ্রাস করছে। গবেষণার মাধ্যমে তা নিরুপন করে এবং কার্যকরী আইন ও নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। জাপানের ন্যায় কৃষি উত্পাদনে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জৈবসার এবং জৈব বিকল্প ব্যবহারের বাধ্যবাদকতা আনয়নের উদ্যোগ গ্রহন করা আবশ্যক। এসব জৈব উপকরন উত্পাদনের ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনে প্রণোদনা এবং বিনিয়োগ প্রয়োজন।
বাংলাদেশের মাটিতে জৈব পদার্থের উপস্থিতি বর্তমানে ২% এর নিচে নেমে এসেছে। যেখানে আদর্শভাবে ৫% জৈব পদার্থের উপস্থিতি মাটির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর ন্যূনতম মাত্রা ২% হওয়া আবশ্যক। মাটি নিজস্ব সার পুনর্ব্যবহার করার ক্ষমতা রাখলেও, শিল্পবর্জ্য পুনর্ব্যবহার সম্ভব নয়। এর ফলস্বরূপ, শিল্পদূষণের প্রভাবে মাটির উপরিভাগ দিন দিন প্রাণহীন হয়ে পড়ছে। ইটভাটাগুলোও একটি বড় দূষণের উৎস, যা সরাসরি মাটির অবক্ষয় ঘটায়। মাটি, পানি ও বায়ু দূষণ পরস্পরকে প্রভাবিত করে এবং এভাবেই একটি দূষিত চক্র তৈরি হয়। দূষিত বায়ু এবং পানি অবশেষে মাটিতে জমিয়ে তৈরি করে নতুন সমস্যা। এই ধরনের পরিবেশগত ক্ষতি শুধুমাত্র কৃষির জন্যই ক্ষতিকর নয়, বরং অন্যান্য উদ্ভিদ এবং মাইক্রোবায়াল জীবজগতকেও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে প্লাস্টিক মাটি দূষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।

বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মাটি ছাড়া পৃথিবীতে প্রাণবৈচিত্র্য টিকে থাকতে পারে না। এটি শুধু আমাদের খাদ্য সরবরাহ করে না, বরং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, মাটির সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ জরুরি, এবং সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা মাটির অবক্ষয় রোধ করতে সক্ষম হবো। আসুন, আমরা সবাই মাটির প্রতি দায়িত্বশীল হই এবং পৃথিবীকে আরও সুন্দর, নিরাপদ এবং উর্বর রাখার জন্য কাজ করি।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই উক্তি স্মরণ করে এই লেখা শেষ করছি,

“ও আমার দেশের মাটি, তোমার ’পরে ঠেকাই মাথা
তোমাতে বিশ্বময়ীর, তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা
তুমি মিশেছ মোর দেহের সনে
তুমি মিলেছ মোর প্রাণে মনে
তোমার ওই শ্যামলবরণ কোমল মূর্তি মর্মে গাঁথা।”

লেখক: ড. তোফাজ্জল ইসলাম: প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও অধ্যাপক ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (আইবিজিই), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফেলো, বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি

RELATED ARTICLES
- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments