সম্প্রতি প্রথমবারের মতো দেশীয় শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসলিমা খানম ও তার গবেষক দল।
এ সংক্রান্ত গবেষণা ও এটির ফলাফল সবার সামনে তুলে ধরতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ওই গবেষকদল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: রফিকুল ইসলাম সরদার, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো: হারুন-অর-রশিদ, সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আফরিনা মুস্তারি, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: আজহারুল ইসলাম এবং গবেষণাসংশ্লিষ্ট সবাই।
সংবাদ সম্মেলনে ড. তাসলিমা খানম বলেন, ‘দেশীয় শিং মাছ জনপ্রিয় ও বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছের প্রজাতি। জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যা, অতিরিক্ত আহরণ ও প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংসসহ নানা কারণে দেশীয় এ মাছটি বর্তমানে হুমকির মুখে। মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদনের জন্য লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিন শনাক্তকরণ অত্যন্ত জরুরি। তাই ২০২০ সালে শিং মাছের জিন নিয়ে গবেষণা শুরু করি।’
বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, “রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি এবং হৃদরোগসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্তদের জন্য শিং মাছ অনেক উপকারী। পুরুষ ও স্ত্রী মাছ নির্ধারণকারী সম্ভাব্য জিন শনাক্তকরণের এ গবেষণার ফল স্ত্রী শিং মাছ শনাক্ত করে এর উৎপাদন বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।”
ড. তাসলিমা সম্মেলনে আরও বলেন, ‘প্রচলিত হরমোন প্রয়োগ পদ্ধতির পরিবর্তে ‘মার্কার অ্যাসিসটেড সিলেকশন (এমএএস) পদ্ধতিতে স্বল্প সময়ে স্ত্রী শিং মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হবে, যা অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব। গবেষণা কাজের ফলাফল চলতি বছরের মার্চে জাপানিজ সোসাইটি অফ ফিশারিজ সায়েন্স আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং ওই বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে কনফারেন্স পেপার হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটির উপাত্ত ওই বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে উপস্থিত আন্তজার্তিক মানের ৩০০ বিজ্ঞানীর সামনে উপস্থাপিত হয়। এছাড়া এ গবেষণার ফলাফল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ হিসেবে প্রকাশের জন্যে বর্তমানে সম্পাদনা পর্যায়ে রয়েছে।’