Wednesday, December 4, 2024
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
spot_img
HomeCampusপবিপ্রবিতে রাতভর র‍্যাগিংয়ে হাসপাতালে ৩ শিক্ষার্থী, বহিষ্কার  ৭

পবিপ্রবিতে রাতভর র‍্যাগিংয়ে হাসপাতালে ৩ শিক্ষার্থী, বহিষ্কার  ৭

Print Friendly, PDF & Email

পবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ র‍্যাগিংয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বনের ঘোষণা দিলেও রাতভর র‍্যাগিংয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ৩ শিক্ষার্থীকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ৭ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করে তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটায়  বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে এ ঘটনা ঘটে। এম. কেরামত আলী হলে অবস্থানরত স্নাতক প্রথম বর্ষের (২০২৩-২৪সেশন) সকল শিক্ষার্থীরা র‍্যাগিং এর শিকার হয়।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার দিবাগত গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র‌্যাগ দেওয়া হয়। র‍্যাগিং চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করেই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ৩ জন শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই অমানবিক নির্যাতন এর কারণে অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০২৩-২৪ সেশনের এক শিক্ষার্থী জানান, আনুমানিক রাত বারোটায় ইমিডিয়েট সিনিয়ররা আমাদের গনরুমে এসে আমাদের সকলের ফোন জমা নিয়ে একটা টেবিলে রেখে দেন। আমাদেরকে কান ধরে উঠা বসা করতে বাধ্য করে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, বিভিন্ন বাধ্যতামূলক নিয়ম বলে, সিগারেট এর ধোয়ায় অসস্থিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে গনরুমে। এছাড়াও আমাদের জানালায় ঝুলানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।

উক্ত পরিস্থিতি এর খবর পেয়ে এম. কেরামত আলী হল এর প্রভোস্ট অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সহকারী প্রক্টর মোঃ আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং গনরুমে ঢুকে র‍্যাগিং দেওয়ার সাথে যুক্ত দুই জনকে কম্বল মুড়ি দিয়ে থাকা অবস্থায় হাতেনাতে ধরেন এবং ক্যান্টিনে গিয়ে চারজনকে র‍্যাগিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এ পর্যন্ত পবিপ্রবি প্রশাসন থেকে পাওয়া বক্তব্য অনুযায়ী ২০২২-২৩ সেশন এর ৭ জন শিক্ষার্থী এ কাজে জড়িত বলে নিশ্চিত করেছেন।

পরিস্থিতি অনুযায়ী  ৩ জন অসুস্থ শিক্ষার্থীর অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন হওয়ায় রাতেই তাদেরকে পবিপ্রবির হেলথ কেয়ার এর কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর জন্য বলেন এবং রাতেই পবিপ্রবির অ্যাম্বুলেন্সে করে উক্ত অসুস্থ শিক্ষার্থীদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

র‍্যাগিং মূলত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগত নতুন শিক্ষার্থীদের উপর পুরানো বা সিনিয়র শিক্ষার্থীদের কর্তৃক চালানো একটি নেতিবাচক ও অপ্রীতিকর আচরণ, যেখানে নবাগতদের মানসিকভাবে অথবা শারীরিকভাবে হয়রানি করা হয়। ম্যানার শিখানোর নামে, নবাগত শিক্ষার্থীদের বিব্রতকর প্রশ্ন করা, অসামাজিক অঙ্গভঙ্গি এবং কখনো কখনো শারীরিক নির্যাতন করা হয়, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার উপরে।

এমন পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, “র‍্যাগিং বন্ধের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি ব্যর্থ? তারা কি শুধু বলার জন্যেই বলে যাচ্ছেন, প্রভাব বিস্তারে তারা কি অপারগ বা তারা শুধু বলেই যাবেন আর কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এই র‍্যাগিং নামক ভয়াবহ মানসিক অত্যাচারের শিকার হয়েই চলবে?”

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান বলেন, “এ পরিস্থিতি একেবারেই কাম্য নয়। উক্ত ঘটনার সাথে যে বা যারা যুক্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পাশাপাশি এমন পরিস্থিতি যেন পরবর্তীতে আর না ঘটে এজন্য পবিপ্রবি প্রশাসন আরো ও অধিক তৎপর হবে এবং এ জন্য সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।”

উক্ত ঘটনায় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম আজ সকালে (রবিবার) শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরজমিনে গিয়ে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিয়ে সর্বোচ্চ সু-চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা অভিযুক্ত ৭ শিক্ষার্থীকে র‍্যাগিংয়ের দায়ে আজই হল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। বিষয়টি নিয়ে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের সাথে সভা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। তাদের সুপারিশক্রমে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তাদেরকে একাডেমিকসহ অধিকতর শাস্তির আওতায় আনা হবে

RELATED ARTICLES
- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments